চন্দ্রযান তিন এর উপর প্রবন্ধ রচনা নিয়ে চলে এসেছি আমরা আজও একটা গুরুত্বপূর্ণ পোস্টে। অনেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক যেসব ছাত্রছাত্রীরা রয়েছে তাদের টেস্ট পরীক্ষার জন্য চন্দ্রযান তিন রচনাটা ওপর হয়তো পরীক্ষায় এসেছে। সেজন্য মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক ফাইনাল পরীক্ষার জন্য এটা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং তোমাদের খুব ভালোভাবে প্র্যাকটিস করে যেতে হবে।
আজকের এই পোস্টটাতে তোমরা খুব সহজভাবে এবং তার সঙ্গে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ রচনাটা তোমরা পাবে কিন্তু খাঁটি ১০ নম্বর পেয়ে যেতে পারো। তবে প্রবন্ধ রচনা নিজস্ব সৃষ্টি থাকলে তবেই বেশি নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাই তোমরা নিচে দেওয়া তথ্যর উপর ভিত্তি করে নিজেদের মতো করে প্র্যাকটিস করে পড়াশোনা করো।
চন্দ্রযান ৩ প্রবন্ধ রচনা | ভারতের চন্দ্র অভিযান রচনা PDF
ভূমিকা :– ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার সাম্প্রতিক এবং তৃতীয় চন্দ্রাভিযান হলো এই ‘চন্দ্রযান ৩’ যা ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো দ্বারা পরিচালিত। এর আগে ‘চন্দ্রযান ২’ চাঁদে ধীর অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল এবং যাদের মাটি স্পর্শ করার সময়ই বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। এখন পর্যন্ত চাঁদে মাত্র তিনটি দেশই সফল অবতরণ করতে পেরেছে। তারা হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীন। আর এই ‘চন্দ্রযান ৩’ -এর সফল অবতরণে ভারত চাঁদে অবতরণকারী চতুর্থ দেশ এবং চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ হতে পেরেছে।
‘চন্দ্রযান ৩’ এর বিশেষত্ব :– চন্দ্রযান ৩ল ভারতের একটি উচ্চাভিলাষী চন্দ্রাভিযান। যেহেতু এই চন্দ্রযান তিন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা অর্থাৎ ইসরো -এর দ্বারা পরিচালিত তাই এই চন্দ্রযান ৩ যে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করবে সেই সমস্ত তথ্যই ইসরোর কাছে পৌঁছে যাবে। এই চন্দ্রযান ৩ তৈরিতে সম্পূর্ণরূপে ভারতীয় প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। এই মিশনকে সফল করতে ইসরোর বিজ্ঞানীরা দিনরাত পরিশ্রম করছিলেন। এর আগে, ‘চন্দ্রযান ২’ -এর মতো একইভাবে ‘চন্দ্রযান ৩’ -এর মধ্যে একটি ল্যান্ডার এবং একটি রোভার প্রজ্ঞান রয়েছে। সেই সঙ্গে এবার একটি অরবিটারও রাখা হয়েছে। এই অভিযানে তিনটি জিনিসেরই নিজস্ব ভূমিকা আছে।
এখানে ল্যান্ডার যানটিকে চাঁদে সফল এবং ধীরভাবে অবতরণ করবে, রোভার প্রজ্ঞান চন্দ্রপৃষ্ঠে থাকা সমস্ত কিছুকেই নিখুঁতভাবে খুঁজে বের করবে এবং অরবিটারের কাজ হবে চাঁদের বায়ুমন্ডলের বিষয়ে সমস্ত তথ্যকে সংগ্রহ করে তা অধ্যয়ন করা। এছাড়াও চন্দ্রযানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিশেষত্বগুলি হল–
১) ভর : এই চন্দ্রযানের মোট ভর ৩৯০০ কেজি। এর মধ্যে প্রপালশন মডিউলের ভর ২১৪৮ কেজি ; বিক্রম ল্যান্ডার মডিউলের ভর ১৭২৬ কেজি ; রোভার প্রজ্ঞানের ২৬ কেজি
২) ক্ষমতা : চন্দ্রযানের প্রপালশন মডিউলের ক্ষমতা ৭৫৮ ওয়াট ; ল্যান্ডার মডিউলের ক্ষমতা ৭৩৮ ওয়াট ; রোভার প্রজ্ঞানের ক্ষমতা ৫০ ওয়াট।
উৎক্ষেপণের স্থান এবং সময়কাল :– সমস্ত ভারতবাসীর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ১৪ জুলাই শুক্রবার নির্ধারিত সময় দুপুর ২:৩৫ মিনিটে এলভিএম থ্রি (LVM3) রকেট কমলা-সাদা ধোঁয়ার মধ্য দিয়ে চাঁদের মাটির স্পর্শের লক্ষ্যে রওনা দিয়েছিল চন্দ্রযান ৩ । এই চন্দ্রযান ৩ এর সফল উৎক্ষেপণে সারা ভারত বর্ষ এক ইতিহাস রচনা করেছে। মাত্র ১৬ মিনিট সময়ের মধ্যে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরে মহাকাশযানটি তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে যায়। এরপর মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণের পর ৪০ দিন পর্যন্ত পৃথিবীর চারিদিকে এবং চাঁদের চারিদিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরতে থাকে।
তারপর, এই চন্দ্রযান ৩, ২৩ আগস্ট ২০২৩ ঠিক সন্ধ্যা ৬:০৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে ‘মানজিনাস সি’ এবং ‘সিম্পেলিয়াস এন’ নামক গর্তের মাঝে ‘শিবশক্তি পয়েন্ট’ নামক স্থানে সফলভাবে ধীর অবতরণ করে আর “বিক্রম ল্যান্ডার” সেখানে অবতরণ করতেই তার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে “Luner Rover” বা “রোভার প্রজ্ঞান” নামক রোবটটি। Luner Rover নামক রোবটটি চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গেই তার চাকার সাহায্যে ‘অশোক স্তম্ভ’ এবং ‘ইসরো’ এর প্রতিক চিহ্ন এঁকে ফেলে।
উদ্দেশ্য :– ইসরোর চন্দ্রযান ৩ মিশনে প্রধান প্রধান কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে। যেগুলি হল–
১) চাঁদের পৃষ্ঠে নিরাপদে এবং ধীরভাবে অবতরণ করা।
২) চাঁদে রোভারের ড্রাইভিং ক্ষমতা পর্যবেক্ষণ এবং প্রদর্শন করা।
৩) চাঁদের গঠন আরও ভালভাবে বোঝার জন্য চন্দ্রপৃষ্ঠে উপলব্ধ উপকরণগুলির উপর পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষা চালানো।
৪) অমূল্য বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ করা।
৫) চাঁদে কত ধরনের প্রাকৃতিক গ্যাস মজুত আছে তাও খুঁজে বের করা।
৬) চন্দ্রযান-৩-এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হল জলের সন্ধান করা।
৭) এই যানটি চাঁদে পৃথিবীর মতো পশু-পাখির বাস আছে কিনা তাও তদন্ত করা
চন্দ্রযান ৩ গুরুত্ব :– চন্দ্রযান ৩ ছিল ভারতের সবচেয়ে প্রত্যাশিত মিশন। সবাই এর উৎক্ষেপণের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করছিল। এর আগে ২০১৯ সালে চন্দ্রযান ২ -এর ব্যর্থতার পর সবাই চন্দ্রযান ৩ -এর সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করছিল। অবশেষে সকলের দোয়া ফলপ্রসূ হলো। চন্দ্রযান ৩ অবশেষে দক্ষিণ মেরু পৃষ্ঠে ভারতের পতাকা উত্তোলন করেছে। এর সাফল্যের সাথে ভারত অনেক সুবিধা পাবে, যেমন–
- চন্দ্রযান ৩ -এর সফলতার জন্য এখন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা আন্তর্জাতিক স্তরের স্বীকৃতি অর্জন করতে পাবেন। এবং ভারতের সম্মান আরও বাড়বে।
- সারা বিশ্ব ভারতের প্রযুক্তিগত ক্ষমতার উপর অনেক আস্থা রাখতে পারবে এবং ভারতে মহাকাশ প্রযুক্তিতে আরও অগ্রগতি হবে।
- চন্দ্রযান ৩ ভারতের জন্য চাঁদের অর্থনীতির পথও খুঁজে পেয়েছে।
- এখন আমাদের দেশের মহাকাশ প্রযুক্তিতে আরও অগ্রগতি হবে।
- চন্দ্রযান ৩ -এর সাফল্য আমাদের ব্যর্থ হলে সেই সময়ে হাল ছেড়ে না দিতে শেখায়।
উপসংহার :– চন্দ্রযান ৩ প্রযুক্তিগত দিক থেকে এতই উন্নত যে, মাত্র চার দিন খোঁজাখুঁজির মধ্যেই Luner Rover নামক রোবটটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খনিজের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ফেলে এবং খোঁজ পাই অ্যালুমিনিয়াম, ক্যালসিয়াম, লোহা, ক্রোমিয়াম, টাইটেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সিলিকন প্রভৃতির। আবার চাঁদের মাটিতে অক্সিজেন এবং অক্সাইডেরও খোঁজ মিলেছে। আর শুধুমাত্র হাইড্রোজেনের অস্তিত্ব পাওয়া গেলেই চাঁদেই মিলবে জল –জানিয়েছেন ISRO -র বিজ্ঞানীরা। ISRO -র এই সফলতাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এমন কি আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র “নাসাও” (NASA) ইসরোকে সম্বর্ধনা জানিয়েছেন।
প্রবন্ধ রচনা: চন্দ্রযান ৩ নোটস পিডিএফ ডাউনলোড
চন্দ্রযান ৩ প্রবন্ধ রচনা [১০ নম্বর] (বাঙালি বিজ্ঞানীদের ভূমিকা): তোমাদের জন্য এখানে সংক্ষেপে দেওয়া হয়েছে, তবে তোমরা যারা বিস্তারিত পড়াশোনা করতে চাও এবং এটার নোট পিডিএফ হিসাবে ডাউনলোড করতে চাও তারা আমাদের নোট এবং সাজেশন এর পোর্টাল “EduTips – Madhyamik Suggestions” – ভিজিট করতে পারো।
চন্দ্রযান ৩ প্রবন্ধ রচনা পিডিএফ: Download Now
মিস করবেন না: Amazon Free AI Course: বিনা খরচায় AI শেখাবে ‘অ্যামাজন’! সুযোগ হাতছাড়া করবেন না, অনলাইনে এপ্লাই করুন
সেখানে তোমরা আরো ভালোভাবে লেখা প্রবন্ধ টা পেয়ে যাবে এবং সেটা তোমরা যে কোন ফাইনাল পরীক্ষায় লিখে আসতে পারলে ভালো নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
এরকমই বিভিন্ন ধরনের সরকারি প্রকল্প, স্কলারশিপ পড়াশোনার আপডেট পাওয়ার জন্য আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হোন -