Kanyashree: কন্যাশ্রী প্রকল্পের স্কলারশিপ! আবেদন পদ্ধতি, যোগ্যতা খুঁটিনাটি জেনে নিন

Westbengal Kanyashree Scheme 2023: কন্যাশ্রী প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্ভাবনী প্রকল্প যা প্রথম চালু হয় সালে। সমাজে আর্থিক কারণে পিছিয়ে পড়া মেয়েদের নিজেদের জীবনের পথে এগিয়ে যেতে এই বিশেষ প্রকল্পটি শুরু করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার। 2017 সালের আগে পর্যন্ত এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র স্কুল এবং কলেজ পড়ুয়া মেয়েদের জন্য নির্ধারিত ছিল। তবে 2017 এর পর থেকে সরকার পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টদের জন্যও এই স্কীমটি বর্ধিত করেছেন।

পশ্চিমবঙ্গে আর্থিক কারণে স্বীকার হয়ে বহু মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ের ঘটনা নতুন নয়। সেই সমস্যার সমাধান করতে 18 বছরের আগে মেয়েদের পড়াশুনা, খেলাধুলা অথবা অন্য সৃষ্টিমূলক কাজে সহায়তা করছে সরকার। এই স্কিমের আওতায় 13 বছরের মধ্যে মেয়েরা আওতাভুক্ত হলে, 18 বছর পর্যন্ত বছরে এককালীন করে তারা একটি স্কলারশিপ পাবে। 18 বছর পর পড়াশুনায় ইচ্ছুক মেয়েরা এককালীন একটি স্কলারশিপ পাবে উচ্চশিক্ষার জন্য। অর্থাৎ মেয়েরা যাতে নিজেদের পড়াশুনো বাধাহীন ভাবে 18 বছর অবধি চালিয়ে যেতে পারে সেই প্রচেষ্টা করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই স্কিমটি পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় আরোপিত হয়েছে।

কন্যাশ্রী প্রকল্প 2023 – একনজরে জরুরি তথ্য

প্রোগ্রামপশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্প (West Bengal Kanyashree Prakalpa)
প্রকল্প উদ্যোক্তাপশ্চিমবঙ্গ সরকার (Goverment of West Bengal)
বিভাগমহিলা উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Department of Women Development and Social Welfare)
সুবিধাপশ্চিমবঙ্গের মেয়েদের আর্থিক সাহায্য করা এবং পড়াশোনায় আগ্রহী করে তোলা
আবেদন পদ্ধতিঅনলাইন
অফিসিয়াল ওয়েবসাইটwbkanyashree.gov.in

Kanyashree Scheme – কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা, জেনে নিন বিশদে

পশ্চিমবঙ্গের মহিলা অগ্রগতি এবং সামাজিক উন্নতির জন্য বহু সরকারি প্রকল্প ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। কন্যাশ্রী প্রকল্প তারই মধ্যে একটি জনকল্যাণকর প্রকল্প। পশ্চিমবঙ্গের পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের মেয়েদের এবং আর্থিক সহযোগিতা না পাওয়ায় পড়াশুনায় পিছিয়ে থাকা মেয়েদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এটি মূলত প্রধান কারণ হলেও, আরও বিশেষ কিছু কারণ বা উদ্দেশ্য রয়েছে এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করার।

  1. কন্যাশ্রী প্রকল্প মেয়েদের শিক্ষার অগ্রগতিকে সুনিশ্চিত করবে এবং দীর্ঘ সময় ধরে তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করবে।
  2. 18 বছরের আগে নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধ করতে উৎসাহ যোগাবে এবং সকল মেয়েদের শিক্ষামুখী করে তুলবে।
  3. নাবালিকা মেয়েদের মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনায় উৎসাহী করা, খেলাধুলা এবং অন্যান্য সৃজনশীল কাজে যুক্ত করে বাল্যবিবাহ রোধে গঠনমুলক ব্যবস্থা নেবে।
  4. দুঃস্থ পরিবার গুলিতে আর্থিক কষ্টের কারণে বহু নাবালিকা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। তাদের মধ্যে যারা অন্য কোনো স্কলারশিপের আওতাভুক্ত নেই, তাদের জন্য এগিয়ে আসবে কন্যাশ্রী প্রকল্প।
  5. উচ্চশিক্ষায় আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে যেসব পরিবারের মেয়েরা, তাদের পড়াশুনো চালিয়ে যেতে সাহায্য করবে কন্যাশ্রী।

যোগ্যতা: কারা কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাবে?

  • পশ্চিমবঙ্গের প্রায় 3.5 লাখ মেয়েরা এই এককালীন স্কলারশিপের আওতাভুক্ত হবে।
  • এককালীন ভাতা পাওয়ার জন্য পড়ুয়াকে 18 বছর বয়সের পর উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হতে হবে।

যেসব মেয়েরা পড়াশুনায় আগ্রহী এবং প্রত্যহ বিদ্যালয়ে যায় পড়াশুনো এবং খেলাধুলার তাগিদে, তাদের নজরে রাখবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

আরো আপডেট: Student Credit Card: ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ প্রকল্প! জানুন সরকারি সুবিধা ও কিভাবে টাকা পাবেন

WB Kanyashree: বিশেষ স্কলারশিপ

বার্ষিক স্কলারশিপ (Annual scholarship K1)

13 থেকে 17 বছর 11 মাস বয়সের মধ্যে মেয়েরা যারা আর্থিক সমস্যার জন্য পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়েছে তারা এই বার্ষিক স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে। 18 বছর বয়সের আগে মেয়েদের বিবাহ রোধ করতে সরকার দ্বারা এই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। এর ফলে মেয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়া অবধি যাতে তারা স্কুল স্তরে পড়াশুনা সম্পূর্ণ করে উঠতে পারে সেই বিষয়কেই গুরুত্ব দেওয়া হবে।

এককালীন ভাতা (One time grant – K2)

K2 স্কীমের আওতায়, 18 থেকে 19 বছর বয়সের মেয়েরা এককালীন ভাতা পাবেন উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য।

কন্যাশ্রী – আবেদনের যোগ্যতা

বয়সের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্কলারশিপ রয়েছে মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্প এর আওতায়। বয়সের ভিত্তিতে মেয়েদের উপযুক্ত স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হবে।

বার্ষিক স্কলারশিপ (Annual scholarship K1 level)

  • আবেদনকারী পড়ুয়াকে আবশ্যিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • অবিবাহিত হতে হবে, পড়ুয়ার বয়স 13 থেকে 17 বছর 11 মাস বয়সের মধ্যে হতে হবে।

18 বছর বয়সী মেয়েরা এই বার্ষিক স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে না। কিন্তু K2 প্রকল্পের এককালীন ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবে।

আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবশ্যই ক্লাস 8 থেকে ক্লাস 12 এর মধ্যে যেকোনো একটি স্তরে পাঠরত থাকতে হবে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান অথবা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সমতুল্য রেজিস্ট্রিকৃত কেন্দ্রে।

পারিবারিক আয়ের সীমাবদ্ধতা বিশেষ ক্ষেত্রে পরিবর্তনের জন্য খতিয়ে দেখা হবে

যেসব ছাত্রী ইতিমধ্যেই স্কিমের আওতায় আছে এবং পুনরায় renewal করছে তাদের স্কলারশিপ তাদের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এককালীন ভাতা (One time grant K2 level)

  • আবেদনকারী পড়ুয়াকে আবশ্যিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • ছাত্রীকে অবিবাহিত হতে হবে 18 বছর বয়স পর্যন্ত।

যেসব মেয়েরা পড়াশুনায় আগ্রহী এবং প্রত্যহ বিদ্যালয়ে যায় পড়াশুনো এবং খেলাধুলার তাগিদে, তাদের নজরে রাখবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

স্কিমের প্রদত্ত অর্থের পরিমাণ

  1. বার্ষিক স্কলারশিপ (Annual scholarship K1 level) – 750 টাকা বার্ষিক (প্রতি বছর প্রযোজ্য 17 বছর 11 মাস পর্যন্ত)।
  2. এককালীন ভাতা (One time grant K2 level) – 25000 টাকা।

আবেদন পদ্ধতি (Kanyashree Online Application process)

কন্যাশ্রী স্কিমের জন্য আবেদন করার আগে ছাত্রীর নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক। আবেদনকারীর বাবা মায়ের হস্তক্ষেপও এই আবেদন পদ্ধতি সম্পন্ন হতে পারে।

Kanyashree Online 5.0 Portal for Application & Track Status
Kanyashree Online 5.0 Portal for Application & Track Status

K1 এবং K2 level স্কলারশিপের আবেদন পদ্ধতি

নিজের প্রতিষ্ঠান অথবা শিক্ষাকেন্দ্র থেকে স্কলারশিপ ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে।

যাবতীয় নিজস্ব তথ্য পূরণ করতে হবে ফর্মে –

১) ব্যক্তিগত তথ্য, ২) ঠিকানা, ৩) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা।

  • যাবতীয় তথ্য পূরণ করার পর, আবেদনকারী ফর্মটিতে নিজের সই করবে এবং অভিভাবক কেও সই করতে হবে। নিজের শিক্ষা যোগ্যতার সমস্ত তথ্যাদি ও প্রমাণ সহ সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি সহ আবেদন করতে হবে।
  • ফর্মটি স্বাক্ষর করার পর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কতৃপক্ষের থেকে অনুমতি নিতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানের স্ট্যাম্প থাকা বাধ্যতামূলক।
  • Acknowledgement স্লিপটি জোগাড় করতে হবে এবং application নম্বরটি যত্নসহকারে নিজের কাছে রাখতে হবে।

সম্পুর্ণ application process টি সম্পন্ন হওয়ার পর, ছাত্রীর কন্যাশ্রীর স্কলারশিপের সকল details সরকারের অফিসিয়াল কন্যাশ্রী ওয়েবসাইট এ আপলোড করে দেওয়া হবে। সম্পুর্ণ প্রসেসটি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য আবেদনকারী ছাত্রীর সকল ডকুমেন্ট সঠিকভাবে জমা করতে হবে।

* কন্যাশ্রী পোর্টাল অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: https://www.wbkanyashree.gov.in/

অবশ্যই দেখুন: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হিন্দি স্কলারশিপ প্রকল্প! প্রতিমাসে ১০০০ টাকা করে পাবেন (জেনে নিন)

K1 স্কলারশিপের জন্য কি কি নথি লাগবে

  1. Bank passbook এর জেরক্স কপি
  2. Unmarried certificate
  3. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে admission এর সকল প্রমাণপত্র
  4. পারিবারিক বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র
  5. বিশেষভাবে সক্ষম পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে disability certificate থাকা আবশ্যক।

কীভাবে কন্যাশ্রী আবেদন Track করতে পারবে?

কন্যাশ্রী প্রকল্পের (Kanyashree Portal) অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ যেতে হবে, Main page এর track application অপশনে ক্লিক করতে হবে।

Drop down মেনু আসবে, সেখানে বছর এবং স্কিমের টাইপ সিলেক্ট করতে হবে। Date of birth, Application ID এবং CAPTCHA ইমেজ পূরণ করতে হবে। তারপর submit অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপরেই ছাত্রী নিজের application process টি ট্রাক করতে পারবে।

কন্যাশ্রী প্রকল্প renewal পদ্ধতি

যেসব ছাত্রী নিজের স্কিমটি renewal করতে চায়, তাদের নতুন আবেদনকারীর মতোই same পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে। তবে renewal এর জন্য income certificate এর এর প্রয়োজন হবে না।

আরো দেখুন: শিক্ষার্থীদের জন্য সবথেকে সেরা ‘সবুজ সাথী প্রকল্প’! জানুন সরকারি সুবিধা ও কিভাবে পাবেন এই প্রকল্প

কন্যাশ্রী প্রকল্প: Helpline number এবং contact details

Address: Bikash Bhaban 10thFloor, DF Block, Sector 1, Salt Lake City Kolkata – 700091

কন্যাশ্রী প্রকল্প এবং এর সুবিধা সংক্রান্ত যদি কোন প্রশ্ন থাকে নিজের হেল্পলাইন নম্বরে আপনারা কথা বলে দিতে পারেন – Kanyashree Helpline Number: 033-23341563।

এরকমই বিভিন্ন ধরনের সরকারি প্রকল্প, স্কলারশিপ পড়াশোনার আপডেট পাওয়ার জন্য আমাদের হোয়াটসঅ্যাপটেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হোন -